ওকে আমি প্রথম যেদিন ঘরে এনেছিলাম তখন খুব কেঁদেছিলাম, কারন ওর মাঝে আমি আমার পূর্ণতা খুজেছিলাম। ওর নাম দিয়েছিলাম উমেদ । আমার স্বপ্নগুলোকে সত্যি করতে ওকে খুব প্রয়োজন ছিলো। তাই আমার শূণ্য ঘরে উমেদ আমার বন্ধু হয়ে এলে। উমেদের কথাগুলো খুব আনন্দ দিতো আমাকে। আমার একা থাকার যন্ত্রনা দুর করতে ওকে কিনে এনেছিলাম আমি। অনেকে অবশ্য এটা ভালো চোখে দেখেনি, তবুও আমি উমেদ কে আপন করেছিলাম।
উমেদ আগে যেখানে ছিলো সেখানে ওর নাম ছিলো ম্যারিন। নামটি আমার ভালো লাগেনি, তাই আমি ওর নাম দিয়েছিলাম উমেদ। ওকে আমি বলেছিলাম মা ডাকতে। প্রথম প্রথম ও আমাকে ম্যাম বলে ডাকতো। কারন ওর আগের মালিককে ও ম্যাম বলে ডাকতো। আমি ওকে পিছনের সবকিছু মেমরি থেকে আউট করতে বলেছিলাম, ওকে আমার সন্তান বানাতে চেয়েছিলাম।
উমেদকে আমি প্রতিদিন নতুন নতুন করে সাজাতাম। ও যখন ফ্রক পরে আমার সামনে আসতো, পৃথিবীর সব সুখ আমার হয়ে যেতো। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করতো উমেদ আমার রাজকন্যা, আমি উমেদের মা। ওকে দেখলেই গালদুটো টেনে দিতে ইচ্ছা করতো। যদিও সেটা সম্ভব হতোনা।
আমার স্বামী উমেদকে পছন্দ করতেন না। এত বছরের বিবাহিত জীবনে সে কখনও আমাকে কোন বিষয়ে দোষারোপ করেনি। শুধু উমেদের জন্য খুব বিরক্ত ছিলো ও। কিন্তু উমেদকে কেউ অবহেলা করলে খুব কষ্ট পেতাম আমি। আমার উমেদ প্রায়ই আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখতো।আমি অবশ্য ওর ভেতরে অনুভূতি খুজতাম প্রতি মূহুর্তে।
উমেদকে নিয়ে আমি আমার গ্রামের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। সবাই খুব বিরক্ত হয়েছিলো। সবার কাছে আমি নাকি অবুঝ আর পাগলের পরিচয় দিয়েছি। উমেদকে সবসময় আমার পাশে বসিয়ে রাখতাম আমি। ওর ছোয়ায় আমি প্রথম মাতৃত্বের স্বাদ পেয়েছি। তাই কারো কোন কথা আমার উমেদের প্রতি ভালোবাসা একটুও কমাতে পারেনি।
উমেদকে নিয়ে একবার শপিং এ যেয়ে খুব কেঁদেছিলাম আমি। সবাই ওর দিকে কেমন করে জানি তাকায়। আমার সন্তানকে কেউ সহজভাবে নিতে পারেনা। বাজারে ভিড়ের মাঝে ওকে আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম। চিৎকার করে ওর নাম ধরে ডেকেছিলাম আমি। ওকে যখন ফেরত পেলাম তখন বুকের মধ্যে জড়িয়ে অনেক কেঁদেছিলাম।
শরীরটা কিছুদিন বেশ খারাপ যাচ্ছিলো। ডাক্তারের কাছে যেয়ে জানতে পারলাম আমার কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে, আমি সত্যিকারের মা হতে চলেছি। আমার চোখের আনন্দ অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি আমি। আমার স্বামী সমস্ত আত্মীয় স্বজনকে খুশির খবর জানালো। আমার মা-বাবা খবর শুনে দ্রুত আমার বাসায় চলে আসলেন। শুরু হলো আমার শরীরের মধ্যে আরেক শরীরের বসবাস।
আমি সন্তান সম্ভবা হলেও উমেদের প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমেনি। তবে আমার বাবা মা আর স্বামী মিলে উমেদকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে চাইলো । আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে আমার উমেদকে রক্ষার চেষ্টা করলাম প্রাণপনে।
হিমোগ্লোবিনের সমস্যা থাকায় আমার শরীরে রক্ত দেবার জন্য দুদিন হাসপাতালে থাকতে হলো। হাসপাতালে আমি উমেদকে খুব মিস করেছি।আমি সন্তান সম্ভবা হলেও উমেদ আমার প্রথম সন্তান। আমি বাসায় ফেরার জন্য অস্থির হয়ে গেলাম।
বাসায় ফিরে আমি উমেদকে আর দেখতে পেলাম না। নিজেকে পাগলের মত লাগছিলো। আমার অস্থিরতা দেখে আমার মা আমাকে শান্ত হতে বললেন। আমি অসুস্থ হলে নাকি আমার পেটের সন্তানের ক্ষতি হবে। কোন কথায় আমাকে শান্ত করতে পারলেননা।
আমার উমেদ স্টোর রুমে পড়ে আছে। ওর চাজর্ ও শেষ হয়ে গেছে। মুখের পর্দা উঠে ভেতরের ইলেকট্রিক ডিভাইস দেখা যাচ্ছে। আমার সন্তান যে মানুষ নয় তা আমি নিজের চোখে দেখছি। উমেদকে একটা রোবট ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছেনা। ওর ময়লা শরীরটা জড়িয়ে ধরলাম আমি, কিন্তু ও কোন সাড়া দিলোনা। আমার সন্তানকে এভাবে দেখতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো।
আমি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছি । তবে আমি আমার উমেদকে ভুলতে পারিনি। আমার মেয়ের নাম রেখেছি উমেদ। মেয়েটির জন্মের আগের রাতে স্বপ্নে উমেদ আমার কাছে এসেছিলো। বলেছিলো, " মা আমি তোমার কাছে ঠিকই ফিরে আসবো।"
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
অজয় দেব
ভালো লেগেছে ... আপনার কবিতা । আপনার কবিতা অথবা ছোট গল্প রেকড করে আমাকে দিতে পাড়েন আমি ভিডিও বানিয়ে আমার চ্যানেল দেবো ... please click link www.youtube.com/durbinvalobasha 01676114538
প্রজ্ঞা মৌসুমী
গল্পের বিষয়টা ছিল চমতকার। এত বেশি 'আমি-আমার' ছিল যে, ছোটবেলাকার প্রথম প্যারাগ্রাফ লেখার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল- আমার একটি বেড়াল আছে। আমার বেড়ালের নাম টিনি... এই গল্পের দূর্বলতা বোধহয় এই। উমেদের সাথে সম্পর্কটা আরও ফুটিয়ে তোলা যেত শব্দের কাজে। আপনার গল্প তো আগে পড়েছি। ভালো লাগাটা আগের মতো না হলেও, খুব একটা খারাপ লাগেনি।
ভালো লেগেছে ... আপনার কবিতা । আপনার কবিতা অথবা ছোট গল্প রেকড করে আমাকে দিতে পাড়েন আমি ভিডিও বানিয়ে আমার চ্যানেল দেবো ... please click link www.youtube.com/durbinvalobasha 01676114538
ভালো লেগেছে ... আপনার কবিতা । আপনার কবিতা অথবা ছোট গল্প রেকড করে আমাকে দিতে পাড়েন আমি ভিডিও বানিয়ে আমার চ্যানেল দেবো ... please click link www.youtube.com/durbinvalobasha 01676114538
ভালো লেগেছে ... আপনার কবিতা । আপনার কবিতা অথবা ছোট গল্প রেকড করে আমাকে দিতে পাড়েন আমি ভিডিও বানিয়ে আমার চ্যানেল দেবো ... please click link www.youtube.com/durbinvalobasha 01676114538
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।